দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: বৈশ্বিক আউটসোর্সিং বাজার সম্পর্কে কিছু বলুন।
ম্যাট কুপার: অনলাইন কাজের এ বাজার এ বছরের শেষ নাগাদ ১ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌছুবে। এটি নির্দিষ্ট কোন সীমারেখায় আটকে নেই, প্রতিনিয়তই তাই এর পরিধি বাড়ছে। সম্প্রতি আমাদের করা এক সার্ভে থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ৭ হাজারেরও বেশি গ্রাহক প্রতিষ্ঠান বর্তমানে আমাদের সাইটের মাধ্যমে কাজ দিচ্ছে। এরমধ্যে ৭৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করানোর মানসিকতা নিয়েই আমাদের সাইটে এসেছেন। মোট গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের ৮৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন যে অনলাইনে দক্ষ কর্মীদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া সাধারণ বিষয়ে পরিণত হবে।
দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: প্রথাগত কর্পোরেট চাকরির চেয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করলে একজন দক্ষ কর্মী কোন সুবিধাগুলো বেশি পাচ্ছে?
ম্যাট কুপার: কর্পোরেট চাকরির চেয়ে অনেকভাবেই বেশি সুবিধা পাচ্ছেন একজন ফ্রিল্যান্সার। নিজে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন, পাশাপাশি আয়ের বিষয় চিন্তা করলেও দেখা যায় তাঁরা কর্পোরেট চাকরির চেয়েও অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। ওডেস্কের সার্ভে অনুযায়ী, প্রথম বছর একজন ফ্রিল্যান্সার যে মূল্যে শ্রম দিয়ে থাকেন পরবর্তী বছর তা ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়! প্রথম বছরে কেউ প্রতি ঘন্টা ১০ ডলার মূল্যে কাজ করলেও পরবর্তী বছরে তার ন্যূনতম শ্রমমূল্য ১৬ ডলার প্রতি ঘন্টায় গিয়ে দাড়ায়। কোন কর্পোরেট অফিসেই শ্রমমূল্য এই হারে বৃদ্ধি সম্ভব নয়!

আল-আমিন কবির এবং ওডেস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট অব অপারেশনস ম্যাট কুপার
দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা মার্কেটপ্লেসে কেমন কাজ করছে?
ম্যাট কুপার: আমরা বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অসাধারণ অগ্রগতি লক্ষ্য করছি। ২০০৯ সালে ওডেস্কের মোট কাজের মাত্র ২ শতাংশ করতেন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা। মাত্র দু’বছরে এ কাজের হার পৌছেছে ১২ শতাংশে। মার্কেটপ্লেসে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় স্থানে। এবছরের প্রথম প্রান্তিকেই বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা ওডেস্কে ৭ লাখ ২০ হাজার ঘন্টা কাজ করেছেন। আগের বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের কাজের পরিমাণ ছিল সাড়ে চার লাখ ঘন্টা। বছরের শেষ প্রান্তিকে এটি দাড়ায় ছয় লাখ ঘন্টায়। প্রতি প্রান্তিকেই ১ লাখ ঘন্টা অতিরিক্ত যোগ হচ্ছে। আমরা বেশি কাজের পাশাপাশি বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ব্যাপারে ইতিবাচক উন্নয়ন লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে পণ্য বিক্রি এবং মার্কেটিং সংক্রান্ত কাজেই তাদের বেশি উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করছি এবছর বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা মোট ২৮ লাখ ঘন্টা কাজ করবে!
দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: বাংলাদেশীরা মূলত কোন কাজগুলো বেশি করে থাকে?
ম্যাট কুপার: ডাটা এন্ট্রি এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজ বেশি হয়ে থাকে। মোট কাজের ৪২ ভাগই এ বিভাগের। এছাড়া ওয়েব ডেভেলপ, ওয়েব ডিজাইন এবং ক্লায়েন্ট সাপোর্ট ছাড়াও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টসহ অন্যান্য কাজও করছেন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সাররা।
দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: বিলিয়ন ডলারের এ মার্কেটপ্লেসের ১২ শতাংশ এখন আমাদের দখলে, এ পরিমাণটা আরও কিভাবে বাড়ানো যেতে পারে?
ম্যাট কুপার: এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে দক্ষতার উন্নয়ন। সাধারণত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত কাজে প্রকল্প ব্যয় বেশি হয়ে থাকে। আর বেশি ব্যায়ের এ প্রকল্পগুলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং ভারতের দখলে বলতে গেলে। এধরণের কাজগুলোতে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। দেখা যায় বাংলাদেশী একজন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার যেখানে প্রতি ঘন্টার জন্য ৩ থেকে ৫ ডলার মূল্যে কাজ করেন সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ওয়েব ডেভেলপার প্রতি ঘন্টার জন্য ৩০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করে থাকেন। কেবল তাঁর দক্ষতার কারণেই এত বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি চার্জ করতে পারছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আমাদের পরামর্শ তোমরা দক্ষতা উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দাও।
দ্য অনলাইন ইন্টারভিউ: বাংলাদেশে তো ফ্রিল্যান্সিংয়ের নামে অনেক প্রতারণার ঘটনা ঘটছে, এ ব্যাপারে ওডেস্ক কি কোন পদক্ষেপ নিতে পারে?
ম্যাট কুপার: হ্যাঁ আমরা বিষয়টি শুনেছি যে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের নামে কিছু স্ক্যাম সাইট বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর আগে ভারত এবং ফিলিপাইনেও একই ধরণের অভিযোগ শুনেছি। আমরা বলবো ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের বিলিয়ন ডলারের এ বাজারে নিজেদের ভাল অবস্থান এবং ক্রমান্নতি ধরে রাখতে স্থানীয়ভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা সবসময় অনলাইনে সচেতনতা বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ করি, স্থানীয়ভাবে তোমাদেরও সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে হবে। প্রতারকদের ঠেকানো না গেলে এক্ষেত্রে নতুনদের প্রবেশ বাধাগ্রস্থ হবে।

আল-আমিন কবির
সোমবার বিকালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত “কনট্রাক্টর অ্যাপ্রেসিয়েশন ডে” অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ঢাকায় এসেছিলেন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠান ওডেস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট অব অপারেশনস ম্যাট কুপার। বাংলাদেশী সফল ফ্রিল্যান্সারদের স্বীকৃতি প্রদান, তাদের মতামত নেয়া, ওডেস্কের নতুন কিছু সুবিধা সম্পর্কে ফ্রিল্যান্সারদের অবহিত করাসহ বেশকিছু উদ্দেশ্য নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে মঙ্গলবার বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং প্রেক্ষাপট, সাফল্য, সম্ভাবনা আর ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস ওডেস্কের অপারেশনস বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাট কুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন আল-আমিন কবির।
Excellent, Bangladeshi der onek kaje lagbe….
vary good interview
thanks.
very very very good News. Bangladesh agiea cholo.
Feeling great 🙂